ফকিরহাটে অসময়ের তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন

News News

Admin

প্রকাশিত: ৮:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫

 

আব্দুল্লাহ সরদার, ফকিরহাট প্রতিনিধি:

বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাছের ঘেরে সারি সারি গাছে ঝুলছে হলুদ, সবুজ ও কালো রঙের অমৌসুমি তরমুজ। কৃষিক্ষেত্রে এই নতুন ও লাভজনক উদ্যোগ কৃষক ও ভোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক এখন এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে এই অমৌসুমি তরমুজ চাষ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ফকিরহাট উপজেলার আটটি ইউনিয়নে বর্তমানে ১০ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক মাছের ঘেরে অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেছেন। কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। মাছের ঘেরের পাড়ের ওপর গাছ রোপণ ও ঘেরে পানির ওপর মাচা হওয়ায় বাড়তি জমি নষ্ট হচ্ছে না। আবার ঘেরের পাড়ের জমি উঁচু হওয়ায় অতিবৃষ্টি বা জলাবদ্ধতার সময় ফসলের কোনো ক্ষতিও হচ্ছে না।

কৃষি বিভাগ জানায়, প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে। ঝুলন্ত তরমুজ চাষ এখন ফকিরহাটের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনা।
নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের একজন কৃষক বলেন, প্রথমবার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ঘেরে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন দারুণ হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব। প্রতি কেজি তরমুজ গড়ে ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তৃপ্তি নামের হলুদ তরমুজ কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আরো বেশি দাম।
ফকিরহাট বাজারের ডাকবাংলো মোড়ে তরমুজ কিনতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, দুই দিন আগে একটি তরমুজ কিনেছি। বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় আজ আবার কিনতে এসেছি।’
উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলায় যাচ্ছে এসব তরমুজ।
মৌভোগ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, ‘অফ সিজনে তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। অনেক কৃষক প্রথমবার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বাজারে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফকিরহাটে তৃপ্তি, ফর্মেলো, বিগ ফ্যামিলি ও ছক্কা_ এই চার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। নলধা-মৌভোগ ও লখপুর ইউনিয়নে এই তরমুজ চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষকদের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হবে।’