কক্সবাজার সদরে ঠিকাদারের অবহেলায় ব্রিজের কাজ বন্ধ : দুর্ভোগ এলাকাবাসীর দৈনিক চৌকস দৈনিক চৌকস প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০২৫ কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার সদরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্মাণাধীন “বহুবিধ রোহিঙ্গা সঙ্কটে জরুরী সহায়তা প্রকল্প (ইএমসিআরপি)” এর আওতাধীন একটি ব্রীজের কাজ বন্ধ রেখে চলে গেছে ঠিকাদার। এতে জনভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটি স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলার খুরুশকুল ও পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কুমারের ছড়া (বাকখালী নদীতে বয়ে যাওয়া একটি উপ-খাল) এর ওপর একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। এক বছর আগে কাজটি ফেলে রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার। এর ফলে ভোগান্তিতে সদর উপজেলার খুরুশকুল ও পিএমখালী ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ। জানা যায়, পিএমখালী ইউনিয়ন ও খুরুশকুল ইউপির কুলিয়া পাড়া হয়ে মাঝের ঘাট ব্রিজ সংযোগস্থল কুমারের ছড়া খালের ব্রিজটি পুনঃ সংস্কারের জন্য পুরাতন ব্রিজ(মোটামুটি ব্যবহার উপযোগী ছিল) টি ভেঙ্গে ফেলা হয় প্রায় দুই বছর আগে। ২০২৩ সালে ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৮১হাজার ৪৬৪ টাকা ব্যয়ে সেখানে নতুন করে এক্স মিলিটারি সড়কে ১৮ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজের অনুমোদন হয়। কাজটি পায় এমই-এমইই-হাসনা জেভি নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু করেন যথা সময়ে। ব্রিজটির নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের ১৫ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ দুই বছরেও শেষ করতে পারেনি। ঠিকাদানী প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১বছর আগে নির্মাণকাজটি বন্ধ রেখে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে রাতের আধাঁরে পালিয়ে গেলেও অদ্যাবধি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউই ব্রিজটি দেখতেও আসেনি। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, একজন মানুষ মারা গেলে প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে লাশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসতে হয়। ব্রিজটির জন্য স্থানীয় মানুষকে নানান দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবদিন জানান, ব্রিজটি খুরুশকুল ও পিএমখালি ইউনিয়নের জন্য খুবই জরুরি। এই ব্রিজ দিয়ে হাজার মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন কক্সবাজার টাউনমূখী মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন এই ব্রিজ। গেল দুই বছর আগে ব্রিজটি দিয়ে কম সময়ে, স্বল্প ভাড়াই স্বাচ্ছন্দ মনে আসা-যাওয়া করে আসছিল মানুষ। কিন্তু যান চলাচলের বিকল্প সড়ক না করে পূনঃসংস্কারের নামে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলার কারণে দীর্ঘদিন যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর। কয়েক মাস ব্রিজ নির্মাণকাজ চলমান ছিল। এই দীর্ঘ সময়েও কাজটি শেষ করনি ঠিকাদার। অথচ প্রায় এক বছর হলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ করে চলে গেছে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, মরহুম সৈয়দ নুর হাজী বাড়ির পশ্চিমে কুমারের ছড়ায় ১৮ মিটার গার্ডার ব্রিজের কাজটি খুরুশকুল ও পিএমখালি ইউনিয়নের কানেক্টিং সড়ক প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত এবং এক সাথে টেন্ডার হয়। ঠিকাদানী প্রতিষ্ঠান শুরুতেই বিলম্ব করে কাজ শুরু করলেও প্রথমে কাজের কিছুটা অগ্রগতি ছিল। এক কয়েক মাস পর থেকে কাজের গতি কমে যায়। বিষয়টি নিয়ে সদর উপজেলার দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করলে জানায় ঠিদাকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ না করে টেন্ডার বাতিল করা হবে। আজ ব্রিজটির জন্য মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছেন। ব্রিজটি দ্রুতসময়ের মধ্যে নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান। প্রকল্পের সুপারভাইজার তোফাজ্জল হোসেনের মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে,আগামী দুই মাসের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ করবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের ঠিকাদার আকরাম সিকদার। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা এলজিইডি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হেলাল উদ্দিন প্রকল্পের কাজ বন্ধ ও কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করেন। বলেন, এরমধ্যে প্রকল্প মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছে ঠিকাদার। তাছাড়া দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছে বিশ্ব ব্যাংক। প্রকল্পটি রিটেন্ডার হবে কিনা অফিস সিদ্ধান্ত নেবেন। এর আগে প্রকল্প বাতিল হতে হবে। প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদার সময় পাবেন। দুই মাস নয় চাইলে ১০ দিনেও কাজ শেষ করা যায়। কাজ না করলে দশ বছরও শেষ করা যাবে না। SHARES সারা বাংলা বিষয়: এলজিইডিকক্সবাজার