রাজনীতি নয়, জনগণের কল্যাণ হোক সংসদের প্রধান লক্ষ্য

প্রকাশিত: ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৫

মোঃ রেজাউল করিম, আইনজীবী, ফরিদপুর জজ কোর্টঃ

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই জাতির অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, নির্বাচন ঘিরে দলীয় কোন্দল, সহিংসতা, অনিয়ম এবং জনগণের আস্থার সংকট স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। এ প্রক্রিয়ায় আসলে জনগণের সত্যিকারের অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত।

সংসদে সরকারদল ও বিরোধীদল থাকলেও, প্রকৃতপক্ষে সেখানে চলে একে অপরকে দোষারোপ, হেয়প্রতিপন্ন করার প্রতিযোগিতা। বিরোধিতা যেন হয়ে উঠেছে উদ্দেশ্যহীন এক চর্চা, যেখানে জাতির স্বার্থ, এলাকার উন্নয়ন কিংবা জনগণের প্রয়োজনীয়তার চেয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে দলীয় স্বার্থ। এই চর্চায় সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হয় না।

আমার বিশ্বাস, এই ব্যবস্থার পরিবর্তন সময়ের দাবি। যদি সংসদে এমন একটি কাঠামো গড়ে ওঠে যেখানে প্রত্যেক সংসদ সদস্য নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন, তাহলে প্রকৃত অর্থে একটি অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র গড়ে উঠবে।

আমেরিকার মতো কিছু দেশ এই দিক থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে। সেখানকার নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দেশের এবং এলাকার স্বার্থে কাজ করেন, নীতিনির্ধারণে অংশ নেন এবং সরকারের সাথেও যুক্ত থাকেন।

আমাদের প্রয়োজন এমন একটি সংসদ—যেখানে বিরোধিতা নয়, থাকবে সহমত; যেখানে দল নয়, প্রাধান্য পাবে জনগণের দাবি। দলীয় বিভক্তি নয়, চাই উন্নয়নের ঐক্য। জনগণের ভোট যেন কেবল সংখ্যা না হয়ে ওঠে, বরং হয় তাদের কণ্ঠস্বর। এই পরিবর্তনই পারে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে।