লক্ষিন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোর্শেদা আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রাফিউল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ :
অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাচনী কেন্দ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, লাইব্রেরি স্থাপন, ক্যামেরা, সাউন্ডবক্স, প্রিন্টার ও ক্রীড়া সামগ্রী কেনার নামে অর্থ লোপাটসহ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন মোর্শেদা আক্তার।
এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার অ্যাপ্রোন, কাব ড্রেস, ওজন মাপার যন্ত্র, গ্লোব ইত্যাদি ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান এবং পরীক্ষার ফি বাবদ অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
শুধু আর্থিক অনিয়মই নয়, নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকা, সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
নির্বাচনী কেন্দ্রের বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাট :
অভিযোগকারীদের দাবি, বিদ্যালয়ের নির্বাচনী কেন্দ্রের ঘর নির্মাণের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে, প্রধান শিক্ষিকা মোর্শেদা আক্তার কোনো ঘর নির্মাণ না করেই সেই অর্থ আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে জনগণের দেওয়া টিনও বিক্রি করে দেন তিনি।
বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক নুর জাহান আক্তার ও জেসমিন আক্তার অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি উল্লেখ করে গত ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া :
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা মোর্শেদা আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম প্রথমে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ শারমিন ইসলাম বলেন, “উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পূর্বের ঘটনার প্রেক্ষাপট :
এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। দেশের বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আগেও উঠেছে। শিক্ষা খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।