পেকুয়ায় প্রাচীন কহলখালী খাল খননের উদ্যোগে জনমনে স্বস্তি

প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫

হাফেজ মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পেকুয়া উপজেলা প্রতিনিধি :

 

পেকুয়ায় এক সময়ের খ্যাতনামা কহলখালী খাল দীর্ঘ সময় ধরে ভরাট হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছিলো। এই খালের উপর প্রভাবশালীদের দখল, দূষণ ও নাগরিক সচেতনতার অভাবের কারণে খালটি হারিয়েছিল তার প্রাচীন সৌন্দর্য। তবে সম্প্রতি, পেকুয়া বাজার ঘেঁষে অবস্থিত এই খালটি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও সংস্থাগুলো।

 

এখন, প্রায় একশো বছর পর, খালটি খনন কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহল জানায়, খনন কাজটি পেকুয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে উপজেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স পর্যন্ত ১৮৫০ মিটার এলাকা জুড়ে চলছে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার, যা পাউবোর স্লুইচ গেট থেকে নুইন্যামুইন্যা ব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত।

 

এই খনন প্রকল্পটি বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) এর আর্থিক সহায়তায় এবং রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (RIC) এর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। খনন কাজের জন্য প্রতিদিন ৭০-৮০ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছেন, এবং প্রতি শ্রমিককে দৈনিক ৫০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে।

 

বাধা এবং প্রতিবন্ধকতা :

 

খনন কাজের উপর বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে মিয়া পাড়া এলাকার কিছু জায়গায় দখলদারিত্বের কারণে কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে, এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

খালের ঐতিহ্য এবং প্রভাব :

 

পেকুয়ায় কহলখালী খালের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এক সময় এটি ছিলো জোয়ার ভাটার খাল, যেখানে নৌকা ও সাম্পান চলাচল করত। তবে, দখল এবং দূষণের কারণে খালটি প্রায় মৃত হয়ে যায়। অতীতে, পেকুয়া ও আশপাশের এলাকা পাহাড়ি ঢলে ডুবে যাওয়ার কারণে খালটি খননের কাজ শুরু করা হয়েছিলো। বর্তমান খনন উদ্যোগের ফলে এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

 

স্থানীয় জনগণের প্রত্যাশা :

 

স্থানীয়রা আশা করছেন, খালটি খননের মাধ্যমে কহলখালী খাল পূর্বের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কার্যকারিতা ফিরে পাবে। এই খালের মাধ্যমে পেকুয়ায় জলবদ্ধতার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে এবং এটি এলাকার পরিবেশে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত করবে।