অভিভাবকহীন জাগৃকে লুটপাট দেখার কেউ নেই

উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল, অফিস সহকারী ও সার্ভেয়ারের সহযোগিতায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১০০ প্লট অবৈধভাবে বিক্রি

প্রকাশিত: ২:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার:

হত্যা মামলার আসামী জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, মিরপুর-২, ঢাকা ডিভিশন -১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম, অফিস সহকারী ও সার্ভেয়ারের সহযোগিতায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১০০ প্লট অবৈধভাবে বিক্রি করে দিয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।

অফিস সহকারী মাহবুব ও সার্ভেয়ার আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় রাজধানীর মিরপুরের রুপনগর, দুয়ারীপাড়ায় অবস্থিত জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) এর ১০০টি প্লট অবৈধভাবে দখল করে বিক্রি করেন জাগৃকের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম।

ইমামুল ইসলাম গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে রিপন মোল্লা নামে তালিকাভুক্ত সদস্য। এলাকায় ইমামুল ইসলামের ডাকনাম রিপন মোল্লা। নিজ এলাকায় রিপন মোল্লা নামেই লোকে তাকে চেনে। জাগৃকের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম নিয়মিত অফিস না করে জাগৃকের প্লট বিক্রি করার দালালিতে বেশী সময় ব্যয় করছেন বলে জানা গেছে। ছুটি কিংবা কতৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারনে জাগৃক কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারনে উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

পরস্পর যোগসাজশে হুকুম দাতার নির্দেশে বেআইনী জনতাবদ্ধ হইয়া হত্যার উদ্দেশ্যে সাধারণ ও গুরুতর জখম করত: আলামত গোপনসহ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বিনষ্ট করা, মালামাল ছিনাইয়া নেয়া ও ককটেল বিস্ফোরক ঘটনামোসহ সহায়তা করার অপরাধের বিচারের নিমিত্ত দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/২০১/ ৩৮৪/১১৪/ ১০৯/৩৪ তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩/৬ ধারায় কেন্দ্রীয় সংসদ ছাত্র দলের সাবেক সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আব্বাস আলী বাদী হয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ মিরপুর-২, ঢাকা ডিভিশন -১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলামসহ ৭০৪ জনের বিরুদ্ধে ডিএমপি পল্টন মডেল থানার মামলা নং ২৫, জিআর নং ৩৭৯/২৪, তারিখ: ১৪/০৯/২০২৪ খ্রি:, দায়ের করেন। উক্ত মামলায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ মিরপুর-২, ঢাকা ডিভিশন-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম ৪৪৭ নং এজাহারভূক্ত আসামী।

সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়) অফিস মেমোরেন্ডাম নং (ইডি) (রেগ-৮)/এস-১২৩/৭৮-১১৫(৫০০), তারিখ: ২১/১১/৭৮ (এস্ট্যাবলিশমেন্ট মেনুয়্যাল ১ নং ভলিউমের পৃষ্ঠা নং – ৮৯২ ও ৮৯৩) এবং বি এস আর ১ম খন্ডের ৭৩ বিধির ১ ও ২ নং নোট অনুসারে কোন সরকারী কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারের পর বা আদালতে আত্মসর্মাপনের পর জামিনে মুক্তি লাভ করিলেও সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে গণ্য হইবেন। তবে, এই ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াইবার জন্য কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্তের ফরমাল আদেশ জারি করিবেন।

সরকারী চাকুরী আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৪১ এর উপধারা (২) এবং সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ (জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের বিধি-৪ শাখা থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও নং ১১০-আইন/২০১৮) এর বিধি ২৫ এর উপবিধি (২) অনুযায়ী কোনো সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো আদালতে ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো কার্যধারা বিচারাধীন থাকিলে, বিচারাধীন কোনো এক বা একাধিক অভিযোগের বিষয়ে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা রুজু বা নিষ্পত্তির ব্যাপারে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা বাধা থাকিবেনা।

তথাপিও হত্যা মামলার আসামী জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, মিরপুর-২, ঢাকা ডিভিশন-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়নি। শুধু তাই নয়,
অফিস সহকারী মাহবুব ও সার্ভেয়ার আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় রাজধানীর মিরপুরের রুপনগর, দুয়ারীপাড়ায় অবস্থিত জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) এর ১০০টি প্লট অবৈধভাবে দখল করে বিক্রি করার ঘটনায় জাগৃকের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম ও তার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হচ্ছে না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাগৃকের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমামুল ইসলাম সাথে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে,অফিস সহকারী মাহবুব ও সার্ভেয়ার আব্দুর রহমান বলেন, অভিযোগ সত্য নয়, এরকম কোনো ঘটনার সাথে আমরা জড়িত নই।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) এর চেয়ারম্যানেরও সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়নি বিধায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।