খুলনা মেডিকেলে “১৬ লাখ টাকার হিসাব গায়েব, ক্ষমতার অপব্যবহার: ক্যাশিয়ার আলিমুজ্জামানের চাঞ্চল্যকর রূপান্তর”

News News

Admin

প্রকাশিত: ২:২৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৫
খুলনা বিভাগীয় অফিস
রাজনৈতিক পরিচয় বদলালেও দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছেন বিতর্কিত কর্মকর্তা; ১৬ লাখ টাকার হিসাব গায়েব, প্রশাসনিক প্রভাব এখনও অটুট। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ক্যাশিয়ার মো. আলিমুজ্জামান একজন জীবন্ত উদাহরণ, যিনি রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে গেলেও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতিতে এখনও সক্রিয়। এক সময় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। বর্তমানে নিজেকে দাবি করছেন বিএনপির শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী ‘পোড়খাওয়া সৈনিক’ হিসেবে এবং স্থানীয় বিএনপি কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে খুমেকে যোগদানের পর থেকেই তিনি হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রমে সরাসরি প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াতের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ক্যাশিয়ারের পাশাপাশি ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বও দেওয়া হয়, যা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বৈধ নয়। এরপর থেকেই তিনি হাসপাতালের রাজস্ব এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে একচ্ছত্র দখল বজায় রাখেন। সরকারি ক্ষমতার পরিবর্তনের পর তিনি আবারও রাজনৈতিক রঙ বদলান। এখন নিজেকে বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী সৈনিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টালেও তাঁর দুর্নীতি থামেনি।
দুর্নীতির অভিযোগ এবং আর্থিক অনিয়ম
★হাসপাতালের লাশ দেওয়ার সময় স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ
★ঠিকাদারি কাজের বিল আটকে ঘুষ আদায়
★রোস্টার বাণিজ্য ও প্যাথলজি সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ
খুলনায় একাধিক ফ্ল্যাট এবং তিনতলা ভবনসহ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন
হাসপাতালের অফিস স্মারক নং খুমেকহা/শা-১/২১/২৪৭০(৬) অনুযায়ী, প্রাক্তন ক্যাশিয়ার হিসাব হস্তান্তরের সময় প্রায় ১৬,২৭,১২৩ টাকা সরকারি কোষাগারে পাওয়া যায়নি। বারবার ডাকলেও আলিমুজ্জামান অফিসে এসে হিসাব বুঝিয়েছেন না।
হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, আলিমুজ্জামান প্রশাসনিক প্রভাব ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া হয়। ফলে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না।
সরকারি বিধি অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা একই সঙ্গে দুটি পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তবু আলিমুজ্জামান এখনও ক্যাশিয়ার ও ওয়ার্ড মাস্টার—দুই পদেই আছেন। হাসপাতালের উপপরিচালক সুজিত আহমেদ তাঁকে মূল পদে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।
হাসপাতালের অফিস সহকারী রফিকুজ্জামানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দ্রুত তদন্ত এবং আলিমুজ্জামানের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতে, “আলিমুজ্জামান এখন আর শুধু ক্যাশিয়ার নন; তিনি এখানে ক্ষমতার এক ছায়াশাসক।”