
মো:সুমন মন্ডল
জয়পুরহাট(কালাই) প্রতিনিধি :
ইসলামী ব্যাংকে গত সাত বছরে (২০১৭–২০২৪) এস আলম গ্রুপের প্রভাব, অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংক লুটেরাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অদক্ষ কর্মকর্তাদের দ্রুত ছাঁটাইয়ের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় গ্রাহক ও সাধারণ মানুষ।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে ইসলামী ব্যাংক কালাই শাখার সামনে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম, কালাই, জয়পুরহাট-এর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ব্যাংক গ্রাহক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ সাল থেকে এস আলম গ্রুপ অবৈধভাবে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপর অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের গোপনে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কাঠামো দুর্বল করে ফেলা হয়।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলের পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদমর্যাদায় শুধুমাত্র চট্টগ্রাম জেলা থেকেই ৭ হাজার ২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি কর্মী শুধু পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। দেশের বাকি ৬৩ জেলার চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে একটি জেলার প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকের শৃঙ্খলা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
ইসলামী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক চৌকস-কে বলেন, “২০১৭ সালে ব্যাংকটির পর্ষদ এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এরপর কোনো নিয়ম না মেনেই হাজার হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকখাতে সংস্কার শুরু হয়েছে। তাই সম্প্রতি ৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তার যোগ্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। গ্রাহকরা আজ তারই প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করেছেন।”
কালাই টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তাইফুল ইসলাম ফিতা বলেন, “এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের ভাবমূর্তি ও সুশাসন ধ্বংস করেছে। কোটি কোটি টাকা লুট করে ব্যাংক খাতকে অস্থিতিশীল করেছে। অবিলম্বে এসব লুটেরা চক্র ও অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে হবে।”
বক্তারা ইসলামী ব্যাংকের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও গ্রাহক আস্থার পুনরুদ্ধারের দাবি জানান।