
মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান রশিদ। জামালপুর বাড়ী হওয়ায়, সাবেক প্রধান মন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন মির্জা আজমের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা যায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত বিতর্কিত কোম্পানী ডেসটিনি গ্রæপের সাবেক ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ মোস্তাফিজুর রশিদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত, যৌন হয়রানী, অনৈতিক কর্মকাÐের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার গুরুতর প্রমাণ পাওয়া গেছে।একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগে জানিয়েছেন, মোস্তাফিজুর রহমান কখনও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মানবাধিকার কর্মী, কখনও পুষ্পধারা হোমস লিমিটেড কোম্পানীর মালিক পরিচয়ের আড়ালে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন।
ব্যবসাকালীন মোস্তাফিজুর রশিদ প্রথমে ডেসটিনি গ্রæপে যুক্ত হন। ডেসটিনি এক সময় টাই পড়া চিটার হিসেবে মানুষ জানতো। সেখানে মানুষকে বিভিন্ন মিথ্যা প্রতিশ্রæতি দিয়ে প্রলোভণ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ী। আকর্ষণীয় লোভনীয় অফার ও কমিশণ বাণিজ্যের ফাঁদ মানুষের সামনে ধরা পড়ে যায়, এক সময় ডেসটিনি বন্ধ হয়ে যায়, রশিদ নিজে হাজার হাজার মানুষকে পথে বসিয়ে সটকে পড়ে এবং গা ডাকা দেয়। কিন্তু সুচতুর রশিদের প্রতারণার ফাদ থেমে নেই। সে একের পর এক গুটি চালতে থাকে নতুন কি প্রতারণা বা কৌশল অবলম্বন করা যায়, ফ্যাসিস্ট আওয়মালীগের ক্ষমতাধর এমপি মির্জা আজমের একনিষ্ঠ কর্মী পরিচয় দিয়ে পেয়ে যান আরেক প্রতারণার লাইসেন্স, নিজেকে মনে করেন ঢাকার জমিদার।
পরবর্তীতে ক্ষমতাধর মোস্তাফিজ হিউম্যান সেইফ এন্ড হেল্প ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন নামে একটি ভুয়া-অবৈধ অনুমোদোনহীণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এখানে মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রæতি দিয়ে সদস্যদের বিভিন্ন লোভনীয় পদ-পদবী দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য সেবা, আইনী সহায়তা, সামাজিক সুযোগ সুবিধা দেয়া, নারীদের কুপ্রস্তাব, মাসে মাসে রেশন প্রদান করবে, বয়স্কভাতা দিবে, প্রতিষ্ঠানের নানা ধরণের মানবিক অফার ঘোষণা করে, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এভাবে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সুকৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেছেন। প্রথমে সদস্য হওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়েছেন মোস্তাফিজ। পাশে হাতিয়ার হিসেবে মির্জা আজমকে ব্যবহার করেছেন। এখানে বিভিন্ন নামে বেনামে কার্ড বিক্রি করতো। এখানেও রশিদ কোন কিছুই তাদের দেয়নি, সাধারণ মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে। তাদের আর্তনাদ যেন থামছেই না।
অভিযোগে আরো জানা যায়, মোস্তাফিজ আরেক হায় হায় কোম্পানী এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এগ্রো ফুড এন্ড বেভারেজ কসমেটিক লিমিটেডের ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করেন এখানেও শত শত কোটি টাকা হাতিয়েছেণ। তিনি একই সম্পত্তি একাািধকবার বিক্রি করে মানুষকে ঠকিয়েছেন। স্টাফদের ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে টাকা প্রদান করেছেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের মুল মালিক পলাতক বহু মামলার আসামী। মোস্তাফিজ সেই সুযোগে গা ডাকা দিয়েছে। মোস্তাফিজ সব সময়ই চিল ধরা ছোয়ার বাইরে। তাকে কেউ কখনও ধরতে পারেনি। তার ক্ষমতা আকাশচুম্বী। তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান করেন।
এরপর মোস্তাফিজের প্রতারণার আরেক ফাঁদ-ডেভেলপার কোম্পানী পুষ্পধারা হোমস লিমিটেড এর পরিচালক পরিচয় দিয়ে মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে একই প্লট-ফ্ল্যাট একাধিকবার বিক্রয় করে কোটি কোটি টাকার চুক্তি করলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। রশিদ সব কিছুই কাগজে কলমে রেখেছেন। এতে অনেক গ্রাহক তাদের বিনিয়োগ হারিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুড়ছে। মোস্তাফিজ কখনও তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তার কাছে আসলে সে মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং আওয়ামীলীগের মির্জা আজমের দাপট দেখিয়ে নিজ এলাকা এবং ঢাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। তার কারণে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দিশেহারা।
মোস্তাফিজুর রশিদ ডেসটিনির আদলে এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড নামক প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিংসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অবৈধ অর্থ যোগানদাতা হিসেবেও বেশ পরিচিত বলেও জানা যায়। মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে প্রতারণা, নারী কেলেঙ্কারীসহ বিভিন্ন প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে অভিযোগ রয়েছে।তার বিরুদ্ধে অফিস কর্মী এবং পরিচিত মহিলাদের সঙ্গে মিথ্যা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণেরও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ কুলসুম আক্তার, নাসিমা আক্তার, পাপিয়া বেগম, হোসনেআরা বেগম, ফাতেমা বেগম, সোবাহান ফরাজী, ফরিদুল ইসলামসহ অনেক লোক বলছেন, মোস্তাফিজের দুর্নীতি প্রতারণার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা কয়েক হাজার এবং ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্ট মানুষ মোস্তাফিজের দ্রæত বিচার দাবি করেন এবং তাকে দুদক এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান পূর্বক ব্যবস্থা নিলে তার লেবাসধারী মুখোশের আড়ালে দুর্নীতির আসল চেহারা বেড়িয়ে আসবে। মোস্তাফিজের নামে রমনা থানায় এবং বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
অনুমোদন বিহীন মানবাধিকার ও ডেভলপার ব্যবসার আড়ালের মানুষের সাথে প্রতারণার মাস্টার মাইন্ড মোস্তাফিজুর রহমান রশিদের নামে বেনামে রয়েছে সম্পদের পাহাড়। তার সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। বিস্তারিত আগামী সংখ্যায় আসছে। চলবে–