রাজশাহী মোহনপুরে সাধারন কৃষক ও পান চাষিদের মধ্য হতাশার ছায়া

News News

Admin

প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২৫

 

ক্রাইম রিপোর্টার রাজীব খাঁন

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা,
৪ অক্টোবর ২০২৫ শনিবার
একদিল তলা হাট থেকে মৌগাছি বাজার পর্যন্ত পানের বাজারে দামের অভূতপূর্ব পতন কৃষকদের জীবনকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলেছে। বাম্পার ফলন সত্ত্বেও ন্যায্য দাম না পেয়ে অনেক চাষী ফসল হাটে ফেলে রেখে ফিরে যাচ্ছেন, যা এই অঞ্চলের পান-ভিত্তিক অর্থনীতিকে গভীর হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
পানের দাম নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এক বিড়া (৬৪টি পান) ছোট পান মাত্র ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা মাসখানেক আগে ৪০-৫০ টাকা ছিল। মোটা-বড় পানের দামও ২০-৪০ টাকায় নেমে এসেছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় এই দাম এতই নগণ্য যে, চাষীরা শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েছেন।

মোহনপুরের হাজারো পান চাষী এই সংকটে জর্জরিত। স্থানীয় কৃষক মজিদুল ইসলাম বলেন, “সার, কীটনাশক এবং শ্রমিকের খরচ তুলতে পারছি না। ঋণের কিস্তি শোধ তো দূরের কথা, পরিবারের খাবার জোগাড় করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।” আরেক চাষী নজরুল ইসলাম বলেন “পান চাষ আমাদের জীবিকার একমাত্র ভরসা ছিল, কিন্তু এখন তাও বিপদগ্রস্ত।” এই সংকটে এনজিও ও মহাজনের ঋণে আবদ্ধ চাষীরা মানসিক চাপে ভুগছেন, যা তাদের জীবনকে আরও কষ্টকর করে তুলেছে।

একদিল তলা হাট ও মৌগাছি বাজারে এই দুরাবস্থা সবচেয়ে প্রকট। বর্ষার শুরু থেকে সংকট তীব্রতর হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি আরও খারাপ। দাম কিছুটা বাড়লেও তা লাভজনক নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মোহনপুরের উপ-পরিচালক কামরুল হাসান বলেন, “উৎপাদন বেশি হলেও বাজারে চাহিদা কম। এছাড়া কাণ্ডপচা, শিকড়পচা রোগ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষতি বাড়িয়েছে। সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, গবেষণার অভাবও এই সংকটের কারণ।”

চাষীরা এখন পান চাষ কমিয়ে অন্য ফসলে ঝুঁকছেন। কামরুল হাসান আরও বলেন, “সরকারি পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা কঠিন। ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ, ঋণ মওকুফ এবং রোগ প্রতিরোধে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন জরুরি।” কৃষি অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন যে, দ্রুত হস্তক্ষেপ না নিলে পান চাষের মতো সম্ভাবনাময় গ্রামীণ অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পড়বে। সরকারি সহায়তা ছাড়া এই অঞ্চলের লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে।