পালপাড়া ডি.এম উচ্চ বিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্টস্ ফোরামের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন ও আলোচনা সভা

News News

Admin

প্রকাশিত: ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫

মোঃ ছলিম উদ্দিন :

ঐক্যের ব্যাচ ২০০২

লক্ষ্ণীপুর জেলার পালপাড়া ডি.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের এক্স স্টুডেন্টস্ ফোরাম এর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকায় চুং ওয়া চাইনিজ রেস্টুরেন্ট বিজয় নগর ঢাকা। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোঃ বাহাউদ্দীন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, এম ইউছুফ ভূইয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জি: জাহাঙ্গীর আলম, কাজী সাফায়েত হোসেন, হানিফ চৌধুরী। মোঃ দেলোর হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মোঃ গোলাম কিবরিয়া (সাবেক সভাপতি পালপাড়া ডি.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের এক্স স্টুডেন্টস্ ফোরাম), অর্থ সহ কোরআন তেলাওয়াত করেন মোঃ শাহাবউদ্দিন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন এক্স স্টুডেন্ট ফোরামের ভিবিন্ন সদস্য বিন্দু। প্রতিষ্ঠানের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০২৬-২০৩০) উন্নয়ন মূলক আলোচনা করেন, মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য,
মূল লক্ষ্য-
এক্স-সুডেন্টস ফোরামকে আগামী পাঁচ বছরে একটি দৃঢ়, টেকসই, প্রভাবশালী এবং সমাজ সেবামূলক সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলা, যা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত ও সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
উদ্দেশ্য সমূহ-
বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখা। বিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা। এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ও মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা। বার্ষিক বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে মেধাবীদের স্বীকৃতি দেওয়া। সামাজিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান। স্থানীয় কমিউনিটিতে দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা প্রদান ।দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও স্মৃতি ধরে রাখা। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা, সফল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান ও তাদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের সংযোগ স্থাপন। কর্মসংস্থান সহায়ক ডাটাবেইজ তৈরি, যাতে বেকার প্রাক্তনদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। প্রতিবছর মিলনমেলা আয়োজন করে সংগঠনের ঐক্য দৃঢ় করা। সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখা। নতুন প্রতিভা অন্বেষণ ও সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি। সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করা
পাঁচ বছর পর আমরা সংগঠনকে যেখানে দেখতে চাই- বিদ্যালয়ের সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং একটি কার্যকর অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গঠন। বিদ্যালয়ে ডিজিটাল লার্নিং সিস্টেম, স্মার্ট ক্লাসরুম এবং আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা। একটি স্থায়ী তহবিল গঠন, যেখান থেকে শিক্ষার্থী ও সমাজের কল্যাণে নিয়মিত সহায়তা দেওয়া যাবে। ফোরামের সামাজিক কার্যক্রমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন। বেকার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখা। বিদেশে বসবাসরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তৈরি।
পাঁচ বছরের সামগ্রিক লক্ষ্য
এক্স-সুডেন্টস ফোরামকে এমন এক সংগঠনে পরিণত করা, যা বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
খাতভিত্তিক পরিকল্পনা
ক) শিক্ষা উন্নয়ন-
বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষে ডিজিটাল প্রজেক্টর ও মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম স্থাপন, বিজ্ঞানাগার হালনাগাদ ও নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি আধুনিকীকরণ ও নতুন বই সংযোজন , শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন, শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশে নিয়মিত বিতর্ক, কুইজ ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজন , বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণির মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের পুরুষ্কার প্রদান, চন্দ্রগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয় সমূহের অংশগ্রহণে বার্ষিক বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন, জাতীয় দিবসগুলোতে বিদ্যালয়ে বিশেষ আলোচনা সভা ও প্রতিযোগিতা আয়োজন, বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংবর্ধনা প্রদান, বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও অনুদান প্রদান, বিদ্যালয়ের অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, বিদ্যালয়ের অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য মানোন্নয়ন প্রকল্প (মডেল টেস্ট, স্পেশাল ক্লাস, মডেল টিচিং সেশন)।
খ) প্রাক্তন শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক ও কর্মসংস্থান-
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সেক্টরে অবদান রাখা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্মাননা স্মারক প্রদান ও মূল্যায়ন। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অ্যালামনাই ডাটাবেইজ তৈরি। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান বা সহায়ক প্রতিষ্ঠান সমূহে কর্মপদ শূন্য থাকলে সেই তথ্য সংগ্রহ ও বেকার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ। দেশ-বিদেশে কর্মরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে একটি গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম গঠন। প্রতিবছর অ্যালামনাই মিলনমেলা আয়োজন।
গ) সামাজিক উন্নয়ন-
প্রতিবছর জানুয়ারিতে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ। স্থানীয় এলাকায় ঈদ, রমজান বা প্রয়োজনকালীন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা। দুর্যোগকালীন সময়ে দ্রুত সহায়তার জন্য ত্রাণ তহবিল ও ত্রাণ সহায়তা টিম গঠন। অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান। গরীব ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি টিউশন প্রকল্প চালু করা।
ঘ) সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও নেতৃত্ব বিকাশ-
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন। বিতর্ক, রচনা প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা ইত্যাদি চালু করা। প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে উৎসাহ প্রদান। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব গঠনে লিডারশিপ ট্রেনিং প্রোগ্রাম চালু। প্রতি বছর একটি বার্ষিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করা, যেখানে শিক্ষার্থীদের লেখা ও প্রতিভা প্রকাশ পাবে।
বছরভিত্তিক রোডম্যাপ (৫ বছর)
বছর- প্রধান কার্যক্রম
প্রথম বছর- ডাটাবেইজ তৈরি, তহবিল গঠন, প্রথম বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, সাময়িকী প্রকাশ
দ্বিতীয় বছর- ডিজিটাল ক্লাসরুম স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সদস্য সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি কার্যক্রম
তৃতীয় বছর- বিজ্ঞানাগার হালনাগাদ, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া উৎসব আয়োজন, বৃত্তিপরীক্ষা আয়োজন, বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন ও ছাত্রদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা
চতুর্থ বছর- কর্মসংস্থান সহায়ক প্ল্যাটফর্ম চালু, বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন, সাময়িকী প্রকাশ, আন্তর্জাতিক প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তৈরি
পঞ্চম বছর- ফোরামের মেগাপ্রোগ্রাম আয়োজন, বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন, ৫ বছরের মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ, পরবর্তী ৫ বছরের পরিকল্পনা ঘোষণা
বাস্তবায়ন কৌশল
প্রত্যেক খাতের জন্য আলাদা সাব-কমিটি গঠন (অর্থ, শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন, ক্রীড়া, তহবিল, মিডিয়া) এবং বার্ষিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে আগে থেকেই তারিখ নির্ধারণ করে সবকিছু পরিকল্পনামাফিক পরিচালনা করা। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও প্রাক্তনদের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান করে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা। ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তথ্য প্রচার। সাময়িকী বা বার্ষিক ক্রোড়পত্রের মাধ্যমে কার্যক্রমের আপডেট প্রকাশ।
বাজেট পরিকল্পনা
লক্ষ্য হলো আগামী ৫ বছরের জন্য একটি বাস্তবসম্মত আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করা, যেখানে সমস্ত কার্যক্রমের সম্ভাব্য ব্যয় এবং অর্থায়নের উৎস স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে, যাতে সংগঠনের কার্যক্রম টেকসইভাবে চালানো যায়।
সম্পদ পরিকল্পনা
স্থায়ী তহবিল- এককালীন বড় অনুদান সংগ্রহ করে একটি স্থায়ী তহবিল গঠন করা, যেখান থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সামগ্রী বা সেবা ভিত্তিক অনুদান- বই, ল্যাব যন্ত্রপাতি, ক্রীড়া সামগ্রী, শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদি সদস্য ও দাতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ। মানবসম্পদ- স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সমাজসেবীদের সম্পৃক্ত করা।
অর্থায়নের উৎস
ক) অভ্যন্তরীণ উৎস-
সদস্য ফি ও বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছা অনুদান, মিলনমেলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে আয়
খ) বহিঃস্থ উৎস-
স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেটদের থেকে সহায়তা। সরকারি/এনজিও সহযোগিতা- শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অনুদান গ্রহণ। আন্তর্জাতিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক- বিদেশে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ডলার/রেমিট্যান্স সহযোগিতা।
এভাবে পাঁচ বছরের পরিকল্পনায় শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজসেবা, কর্মসংস্থান ও মানবিক দায়িত্বের সমন্বয়ে আমরা বিদ্যালয় ও সমাজকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যাশা রাখি।