খুলনায় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২৫

রায়হান তানভীর, খুলনা প্রতিনিধি:

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্য, ঘুষ গ্রহণ ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি এবং গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদায়নের বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হচ্ছে। এসব অনিয়মে তার সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে বড় বাবু শাহীনকে।

৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ

খালিশপুরের এক ওএমএস ডিলার ইমন শেখ অভিযোগ করেছেন, ইকবাল বাহার চৌধুরী তার কাছ থেকে ডিলারশিপ চালু রাখার জন্য ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। টাকা না দেওয়ায় তার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি ১১ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

তদন্তের আশ্বাস

এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা জেলার সদস্য মো. রিদোয়ান শেখ তামিমও লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিযোগ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। একই ধরনের অভিযোগ পাঠানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা, খাদ্য সচিব, মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান এবং খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতির কাছে।

অতীতেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ

সূত্র জানায়, জয়পুরহাট, পাবনা ও ময়মনসিংহে দায়িত্ব পালনকালে ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ময়মনসিংহে দায়িত্বে থাকাকালে মুক্তাগাছায় ৩০০ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগে দুদক মামলা দায়ের করে, যা এখনো চলমান।

খুলনায় স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ বাণিজ্য

২০২৪ সালের মার্চে খুলনায় যোগদানের পর থেকে বদলি বাণিজ্য ও পোস্টিং বাণিজ্যে ইকবাল বাহার চৌধুরী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। গুদামে বদলির জন্য বড় বাবু শাহীনের মাধ্যমে দরদাম করে টাকা নিলেই পদোন্নতি বা বদলি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন খাদ্য বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

অভিযুক্তের বক্তব্য

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ইকবাল বাহার চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন— “আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া। বদলির ক্ষেত্রে আমরা সচিবালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে থাকি। ডিলার ইমন শেখকে আমি চিনি না, ঘুষ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।”

সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা

খুলনা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা মনে করছেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ পাবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।