মনোহরদীতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান: মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের পণ্য বিক্রির দায়ে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা

প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,নরসিংদী:

ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় সচেতনতামূলক ও আইন প্রয়োগমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজারে আজ ২৬ মে ২০২৫, সোমবার, দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক গুরুত্বপূর্ণ বাজার তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানটি পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের নরসিংদী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ মাহমুদুর রহমান। অভিযানে সহযোগিতা করেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ শাহনেওয়াজ, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মোঃ মোবারক হোসেন এবং নরসিংদী জেলা পুলিশের একটি টিম। তাদেরকে সহযোগিতা করেন স্থানিয় বিএনপি নেতা ও বাজার পরিচারনা কমিটির পক্ষে মোঃ জামাল উদ্দিন।

অভিযান চলাকালে যেসব অনিয়ম ধরা পড়ে:

বাজারে তদারকির সময় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করছেন এবং কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য দোকানে সংরক্ষণ করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রেখেছে। এসব কর্মকাণ্ড “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯” এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অভিযানে তিনজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনটির ৪৫ ও ৫১ ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রত্যেককে ৫,০০০ টাকা করে মোট ১৫,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

আইনটির ৪৫ ধারা অনুযায়ী, প্রতিশ্রুত গুণগত মানের পণ্য সরবরাহ না করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর ৫১ ধারা অনুযায়ী, মেয়াদোত্তীর্ণ বা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য সংরক্ষণ বা বিক্রি করলে অর্থদণ্ড বা কারাদণ্ড হতে পারে।

অভিযান শেষে সহকারী পরিচালক মোঃ মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, “ভোক্তা অধিকার রক্ষা করতে হলে বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীদের আইন সম্পর্কে সচেতন করতে এবং ক্রেতাদের অধিকার রক্ষায় এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে।”

তিনি আরও জানান, “বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে প্রতারিত না হয় সাধারণ মানুষ, সে লক্ষ্যে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছি।”

অভিযান চলাকালে অনেক স্থানীয় ব্যবসায়ী আইনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানতেন না বলে দাবি করেন। তারা জানান, তারা এখন থেকে আরো সচেতনভাবে পণ্য যাচাই-বাছাই করে রাখবেন।

স্থানীয় একজন ক্রেতা বলেন, “এ ধরনের অভিযান চালু থাকলে ব্যবসায়ীরা আরও সতর্ক হবে এবং আমরা ভালো পণ্য পাবো।”

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এই ধরনের কার্যক্রম সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ন্যায্যতা নিশ্চিত করে। এই উদ্যোগ বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং জনস্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।