সরদার কালামঃ নিয়ম কানুনের বালাই নেই যেন, যে যখন যেটা ইচ্ছে সেটাই করতে পারে এদেশে।একপ্রকার অনিয়মই যেন নিয়ম হয়ে ওঠেছে দেশের সর্বত্র।যার খেসারত সবসময় সাধারণ মানুষকেই দিতে হয়।
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম- দুর্নীতির খবর বেশ চাউর আছে,তারসাথে যুক্ত হয়ে এবারের অনিয়মটা যেনো কালো থাবা ফেলেছে অসুস্থ রোগী বা গরীব মধ্যবিত্তসহ নানা—
শ্রেনীপেশার খেটে খাওয়া ভোক্তা সাধারণের জীবনের উপর।ওষুধের বাজারে সৃষ্টি হয়েছে একবিরাট অস্থিরতা।এদেশে সুস্থ হয়ে আ_র বেঁচে থাকা হলো না বলে আক্ষেপ ভোক্তা সাধারণের।
যতচাপ সৃষ্টি হয়েছে এভোক্তাসাধারণের জীবনমানের উপর এমনটাই অভিমত।এমনকি ওষুধের দামে চাপ সৃষ্টির জন্য সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা!
তাদের ধারণা সিন্ডিকেটের দখলে ওষুধের বাজার আর একারনেই হুট করে ওষুধের ছাড়ে কাটছাঁট আর ডিসকাউন্ট তুলে নিয়ে দামে ব্যপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।এতে তীব্র অসন্তোষ্ট প্রকাশ করছেন অস্থিরতার বাজারে নানা চাপে থাকা ভোক্তা সাধারণ।
জানা গেছে,সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ওষুধ বিক্রিতে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে আর হুট করে ওষুধ বাজারে জন-ভোগান্তি সৃষ্টি হওয়াই অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা উপজেলা ইউনিয়নের বাজার ফার্মেসিগুলোতে হঠাৎ করেই ওষুধের ডিসকাউন্ট কমিয়ে দেয়ায় ভোক্তা সাধারণের মাঝে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ।
আগে যেখানে ১০-১২শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যেত
,এখন সেটি কমে দাঁড়িয়েছে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশে। এতে ওষুধ কেনার খরচ বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার হাট (৮মে)ও পরবর্তী সময়ে উপজেলা দেয়াড়ার খোরদো বাজারে ওষুধ কিনতে আসা একাধিক ভোক্তারা বলেন,
অসুস্থতার কারণে বাজারের ফার্মেসি থেকে নিয়মিত ওষুধ কিনে থাকেন তারা।
এদিন ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে দেখেন, আগের মত১০-১২শতাংশ নয়,এখন দেয়া হচ্ছে মাত্র৫ শতাংশ ছাড়।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ফার্মাসিস্টরা বলছেন, বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মে মাস থেকে সব ফার্মেসিকে এই নিয়ম মানতে হচ্ছে।
বাজারে দেখা গেছে,প্রায়সব ফার্মেসিতেই একই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
আগে অঘোষিতভাবে এমআরপি থেকে ১০শতাংশ ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করা হলেও এখন তা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশে সীমিত রাখা হয়েছে।
জানাগেছে সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি ৭দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়,সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে সর্বোচ্চ ৫% ছাড়েই ওষুধ বিক্রি করতে হবে।
সেসঙ্গে নকল-ভেজাল-মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানানো হয়।
এসব নিয়ম না মানলে জরিমানা বা দোকান বন্ধ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
তবে হুট করে এ সিদ্ধান্তকে‘সিন্ডিকেটের চাপ’বলছেন ভোক্তা সাধারণ।
সরেজমিন বলছে,উপজেলার খোরদো বাজারসহ অন্যান্য ফার্মেসিতে ডিসকাউন্টে ধস।বাজারের কিছু ফার্মেসি মালিক ছাড় দিয়ে বিক্রি করতে চাইলেও সমিতির চাপে তা পারছে না।
এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে,সমিতি কী প্রশাসন? আর তারা কীভাবে জরিমানা করে?
ওষুধ বাজারে জন-ভোগান্তি আর অস্থিরতায় অতিষ্ঠ গরীব মধ্যবিত্ত পরিবারের খেটে খাওয়া দিনমজুর ভোক্তা সাধারণসহ ভুক্তভোগীরা জানান, আগের তুলনায় এখন ওষুধের পেছনে ৫-৭ শতাংশ বেশি খরচ হচ্ছে, যারফলে দারুণ ভাবে চাপ পড়ছে ও সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক বোঝা সৃষ্টি হচ্ছে।খরচ মেটাতে হিমশিম খাওয়া ভুক্তভোগীরা ক্ষোভের সাথে বলছেন,এদেশে বুঝি সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার সৌভাগ্য আর হল না।
এনিয়ে জানতে চাইলে বাজারে একাধিক ফার্মেসি মালিক বলেন,“কোম্পানিগুলো থেকে যে ছাড় পাই, তাথেকে১০%ছাড় দিলে আমাদের কোন লাভ থাকে না।
বিশেষ করে ছোট ফার্মেসিগুলো টিকে থাকতে হিমশিম খায়।তাই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৫% ছাড় দেওয়ার।
আর সমিতির এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫% ছাড়েই ওষুধ বিক্রি করছেন বলে জানান তারা।
ছোট ফার্মেসি মালিকদের এসব কথার পাশাপাশি বড় ফার্মেসি মালিকরা বলেন,কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিল, দোকান ভাড়া, লাইসেন্স ইত্যাদি খরচ চালাতে তাদের কষ্ট হচ্ছে।
কেউ কেউ ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন কিন্তু দেখা যাচ্ছে কেউ কেউ আবার নতুন করে ফার্মেসি দোকান সাজিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, জানা গেছে নিম্ন মানের ওষুধ বিক্রি করেও অনেকেই লোকসান পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে থাকেন ।এতো আলোচনা সমালোচনার মাঝেও কারো কারো দাবি সমিতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে নানা অনিয়ম রোধ হবে।
এদিকে সচেতন মহল মনে করেছেন, ওষুধ মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি অংশ।এখনকার মূল্যবৃদ্ধি বা ছাড় কমানো সরাসরি স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রভাব ফেলছে।
তাছাড়া এতে দেশের গরীব মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ গুলোর উপর দারুণ ভাবে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।সুতরাং বিষয়টি দ্রুততার সহিত যাচাই করে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন এবং তা সময়ের দাবি।
হঠাৎ ওষুধ বাজারে এ জন-ভোগান্তি-অস্থিরতা নিয়ে এক গনমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,
বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রয় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো.সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবির ভিত্তিতে একাধিক বৈঠকের পর সমিতির ৭ দফা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।তবে এই সিদ্ধান্ত শুধু সমিতির সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য।
এছাড়া আরো উঠে আসে সাতক্ষীরা জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান তানভীরের দেয়া এক বক্তব্য।যেখানে বলা হচ্ছে,কোন ব্যবসায়ী ওষুধ কম মূল্যে বিক্রি করায় সমিতি যদি তাকে জরিমানা করে ও তিনি অভিযোগ করেন, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ভোক্তা অধিদফতর।
এরপর সাতক্ষীরা জেলা ড্রাগ সুপার মো. বাসাররাফ হোসেনের মতামতও প্রকাশ করা হয়।
সেখানে বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে ফার্মেসি মালিকেরা ওষুধ বিক্রি করতে পারেন।কেউ কম মূল্যে বিক্রি করলে কোনো সংগঠন বা সমিতি তাকে বাধ্য করতে পারবে না।
তবে জনমনে প্রশ্ন জাগে, এদেশে একবার মূল্যবৃদ্ধি হলে কিম্বা কেউ সুযোগ পেলে আর কি কেউ ছাড় দিয়ে কোনো পন্য বাজারে ভোক্তার হাতে ছাড়ে?
অবশেষে সব সম্ভবের বাংলাদেশে দুঃখের কথা কারে কবো(কার সাথে বলব কষ্টের কথা)!
এই নানা অসঙ্গতি অনিয়ম দুর্নীতি অপরাধে অসুস্থ পরিবেশ পরিস্থিতির প্রভাবে প্রভাবিত এজন্মভূমির প্রতিবেদক হিসেবে সবগল্প বলাও লজ্জাজনক তবু যদি বলি, নিজেও একই ভোগান্তিতে ভুক্তভোগী দুর্ভাগাজনতা।
এই পরিস্থিতি সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যেও চরম উদ্বেগ তৈরি করেছে।অনেকে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন, যাতে ওষুধেরমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে,সবার জন্য মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হয়,এবং প্রতিটি মানুষ যেন সুস্থ থাকতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস এম নজরুল ইসলাম, সহ- সম্পাদকঃ জাহিদ হোসেন (সজল)
চৌকস মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক চৌকস ভবন চরকালিগঞ্জ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং আল আমিন প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজ লিঃ ১৪৩/বি চৌধুরীপাড়া ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন (৪র্থ তলা) মতিঝিল বা/এ,ঢাকা-১০০
মোবাইলঃ +৮৮০১৭১৬-১২৭৮১১, +৮৮০১৯৩৩-৯৪৮৫৬৭
ই-মেইলঃ dainikchoukos@gmail.com, choukasinfo@gmail.com
ওয়েবসাইটঃ www.dainikchoukos.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত