স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে ইসলামী আদর্শ ও অনুশাসনে আগ্রহী হতে হবে-মুফতী মানসুর আহমদ সাকী দৈনিক চৌকস দৈনিক চৌকস প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৫ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমাদ সাকী বলেছেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা মরণপন যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ-বিশ্বাসের আলোকে শাসনকাজে ইসলামী আদর্শ অনুসৃত না হওয়ায় আমাদের স্বাধীনতা পুরোপুরি অর্থবহ হয়ে ওঠেনি। এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শাসনতন্ত্র রচিত হয়নি। তাই অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে আমাদেরকে ইসলামী আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। প্রধান অতিথি আরও বলেন, গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ আবার নতুন করে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা জালিমের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেশের মানুষ মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে। দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে এবং শান্তিতে-স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছে। এমনই একটি সময় আজ স্বাধীনতা দিবস পালন হচ্ছে। এই দিবসে তিনি শান্তি-স্বস্তির নতুন বাংলাদেশ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সকলকে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ইকবাল হোসেন ও দক্ষিণ-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম নাসির উদ্দিনের সঞ্চালনায় ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ্ তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল মজুমদার ও ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মুফতী জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ। মুফতী মানসুর আহমাদ সাকী বলেন, সরকার দেশের জনগণকে শৃঙ্খলিত করে রেখেছে। জাতিকে এ শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার একমাত্র পথ হলো জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। তিনি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং তাদের রূহের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করেন। তিনি বলেন, পতিত সরকারের দোসররা এবং দেশের স্বার্থান্বেষী মহল বিদেশী আধিপত্যবাদী শক্তির সহায়তায় ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন এবং দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে ভুলন্ঠিত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে চলছে। তারা দেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে চাইছে এবং পতিত স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে আনার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। এ অবস্থায় আজ স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতা দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তদানীন্তন শাসককোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। ক্ষুধা-দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও দুঃশাসন মুক্ত একটি দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আজ দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি হিসাব করলে দেখা যায়, বহু প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সহ-সভাপতি মুফতী শওকত উসমান, উত্তরের সহ-সভাপতি মুস্তাইজ বিল্লাহ, নগর দক্ষিণ এর সাংগঠনিক সম্পাদক ক্বারী মাহমুদুল হাসান, দাওয়াহ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক রায়হানুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ হাসানুজ্জামান হিমেল সহ নগর ও থানা নেতৃবৃন্দ । SHARES সারাদেশ বিষয়: