মোছাদ্দেক হোসেন বাহার, ভোলা প্রতিনিধি:

উপকূলীয় জেলা ভোলায় শীতের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষ, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া অসহায় জনগণ শীতের কারণে কঠিন সময় পার করছেন। এই পরিস্থিতিতে ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল অসহায় শীতার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে এক মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাজার ও গ্রামে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন ইউএনও। পরানগঞ্জ বাজার, ভোটের ঘর, পাইলট বাজার, ইলিশা কাচারি, হাজির হাট, এবং জংশন বাজারে দুস্থ পথচারী, রিকশাচালক, অটোরিকশাচালক, চায়ের দোকানদার, পানের দোকানদার এবং ভ্রাম্যমাণ হকারদের হাতে নিজ হাতে কম্বল তুলে দেন তিনি।

মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

ইউএনও সজল চন্দ্র শীল নিজ উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের জন্য এই সহায়তা কার্যক্রম চালান। কম্বল বিতরণের সময় তিনি শীতের কষ্ট উপেক্ষা করে রাতভর ছুটে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন এলাকায়। শীতার্ত মানুষের গায়ে নিজ হাতে কম্বল জড়িয়ে দিয়ে তিনি কেবল সহায়তাই করেননি, বরং তাদের মনোবলও চাঙা করেছেন।

কম্বল পেয়ে অনেকেই ইউএনও’র এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এক বৃদ্ধা বলেন, “ইউএনও স্যার নিজ হাতে আমাদের কম্বল দিয়ে গেছেন, এতে আমরা অনেক খুশি।” এক রিকশাচালক বলেন, “এই শীতে আমাদের কেউ খোঁজ নেয় না, কিন্তু স্যার এসে আমাদের শীত নিবারণের ব্যবস্থা করেছেন। আমরা তার জন্য দোয়া করি।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

ভোলা সদর উপজেলায় অতীতে বহু ইউএনও দায়িত্ব পালন করেছেন, তবে স্থানীয়রা জানায়, এমন মানবিকতা আগে কেউ দেখাননি। এক দোকানদার বলেন, “দেশে যদি এমন মানবিক সরকারি কর্মকর্তা বেশি থাকত, তাহলে আমাদের মতো অসহায় মানুষের কষ্ট অনেকটাই কমে যেত।”

সজল চন্দ্র শীলের এই উদ্যোগ শুধু শীতার্তদের সহায়তাই করেনি, বরং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করেছে। তার এই মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসনের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। এ ধরনের সহানুভূতিশীল উদ্যোগ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।