গাছ কাটা যাবে না, দেশীয় গাছ লাগাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫

জুবেল আরিফিন  রংপুর :

 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ কাটা যাবে না, শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে। তিনি আরও বলেন, আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের মতো বিদেশী গাছের পরিবর্তে দেশীয় গাছ লাগানো উচিত।

 

আজ (৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুর সার্কিট হাউজে বন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।

 

দেশীয় গাছের প্রতি জোর দেওয়া হবে :

 

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমাদের দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে দেশীয় গাছ লাগানোর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের মতো বিদেশী গাছ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, তাই এসব গাছের পরিবর্তে দেশীয় গাছ লাগাতে হবে।”

 

তিনি আরও বলেন, সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের গাছ বিক্রি করার পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে।

 

পরিবেশ রক্ষায় সংস্থাগুলোর কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন :

 

সভায় উপদেষ্টা আরও বলেন, “বন ধ্বংস, দূষণ এবং পানি সংকট মোকাবিলায় এককভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বন পুনঃস্থাপন, জলাধার সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”

 

তিনি পাথর ভাঙা রোধ এবং অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

 

রংপুর অঞ্চলে বন ও পানি সমস্যার চ্যালেঞ্জ :

 

সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, রংপুর অঞ্চলে বন উজাড়, শিল্প ও কৃষি দূষণ এবং পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে, এসব সমস্যার সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে।

 

এর আগের ঘটনা: বন ও পরিবেশ পরিস্থিতি :

 

২০ জানুয়ারি ২০২৫: বন উজাড় রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ

 

জানুয়ারিতে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন বিভাগের একটি যৌথ অভিযানে রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় বন উজাড় এবং অবৈধ বনের কাঠ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানটি ব্যাপকভাবে সফল হয় এবং বন উজাড় বন্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

 

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪: নদী ভাঙন রোধে উদ্যোগ :

 

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের নদী ভাঙন রোধে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে বাঁধ নির্মাণ ও নদী পাড়ের শক্তিকরণ কাজ শুরু হয়, যা নদী ভাঙন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

 

সভায় উপস্থিত ছিলেন :

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম

 

বগুড়া সামাজিক বন সার্কেলের বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান

 

পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম

 

 

এছাড়াও বন অধিদপ্তর ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।