নাটোরে মটরশুটি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে দৈনিক চৌকস দৈনিক চৌকস প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫ অনলাইন ডেক্স : উচ্চ বাজারমূল্য ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধির সুফল পাচ্ছেন কৃষকরা নাটোর জেলার কৃষকরা মটরশুটি চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কম খরচ, ভালো বাজারমূল্য এবং জমির উর্বরতা বৃদ্ধির কারণে এই ফসল দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় মোট ১,০৭৭ হেক্টর জমিতে মটরশুটি চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ১৩ হাজার টন উৎপাদন আশা করা হচ্ছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। কোন উপজেলায় কত জমি চাষ হয়েছে? বাগাতিপাড়া: ৩৭৯ হেক্টর নাটোর সদর: ২৫০ হেক্টর লালপুর: ২১০ হেক্টর নলডাঙ্গা: ১১৬ হেক্টর বড়াইগ্রাম: ১১২ হেক্টর গুরুদাসপুর: ১০ হেক্টর গত বছর জেলায় ১,০২২ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার টন মটরশুটি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর আবাদী জমি ও উৎপাদন—উভয়ই বেড়েছে। কেন জনপ্রিয় হচ্ছে মটরশুটি চাষ? নাটোর সদর উপজেলার কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, “আমি আড়াই বিঘা জমিতে মটরশুটি চাষ করেছি। দু’দফায় ৫০ মণ পেয়েছি, আশা করছি তৃতীয় দফায় আরও ১৫ মণ পাবো।” কৃষক আল আমিন জানান, “মটরশুটি গাছ মাটির উর্বরতা বাড়ায়। তাই ফসল কাটার পর জমিতে পাট চাষ করলে সার কম লাগে।” উৎপাদন খরচ ও সারের ব্যবহার মটরশুটি চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। জমিতে সাধারণত টিএসপি ও পটাশ সার লাগে, তবে ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হয় না। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, “মটরশুটির শেঁকর ইউরিয়ার মতো কাজ করে, ফলে কৃষকদের অতিরিক্ত সার ব্যবহার করতে হয় না। পরবর্তী ফসলের জন্যও ২০% কম ইউরিয়া প্রয়োজন হয়।” বাজারদর কেমন? নাটোরের হয়বতপুর, দত্তপাড়া এবং ছাতনী বটতলা বাজারে প্রতিদিন শত শত মণ মটরশুটি বিক্রি হচ্ছে। বড়হরিশপুরের কৃষক হযরত আলী জানান, “আমি ১২ মণ মটরশুটি ২,৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। মৌসুমের শুরুতে দাম দ্বিগুণেরও বেশি ছিল।” ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “মটরশুটি চাষে কৃষকের লাভ হচ্ছে, মাটির গুণগত মানও বাড়ছে। ভবিষ্যতে এটি নাটোরের অন্যতম অর্থকরী ফসল হয়ে উঠবে।” সরকারি সহায়তা ও সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা থাকলে মটরশুটি চাষ নাটোরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। SHARES ফিচার বিষয়: