দুর্নীতির দায়ে খুলনার সাবেক এমপি মিজানের ৮ বছরের কারাদণ্ড, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১.৪৪ কোটি টাকার বাজেয়াপ্ত নির্দেশ

প্রকাশিত: ৫:২৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫

মোঃ আবদুল্লাহ্, খুলনা জেলা প্রতিনিধি

খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের রায়

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারায় মিজানুর রহমানকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, দুটি ধারার সাজা একত্রে চলবে। ফলে, সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এক কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৯ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার প্রেক্ষাপট

২০১৯ সালের ৬ আগস্ট, দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১-এ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ। ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, মিজানুর রহমান ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

আদালতের কার্যক্রম

২৩ জানুয়ারি, দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ৩০ জানুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন জামিন বাতিল করে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা জারি করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামিপক্ষের প্রতিক্রিয়া

আসামির আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান দাবি করেন, “রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে শেখ পরিবারের রোষানলে ফেলে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখানে ন্যায়বিচার পাব বলে আশাবাদী।”

পরবর্তী পদক্ষেপ

মিজানুর রহমানের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আপিল কার্যক্রমে রায়ের সঠিকতা ও ন্যায়বিচারের দাবি নতুন করে আলোচনায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।