প্রতারণা মামলা: নামে একজন, কারাগারে অন্যজন


ফরহাদ ভুইয়া, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে একটি প্রতারণা মামলার আসামি নবিজ উদ্দিনের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরেক ব্যক্তি, আজির উদ্দিন। কারাগারে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে ধরা পড়ে তিনি প্রকৃত আসামি নন। এতে বিভ্রান্তিতে পড়ে আদালত ও কারা কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার পটভূমি
২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর লোহা ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন প্রতারণার অভিযোগে নবিজ উদ্দিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা চার লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন।
গত ১১ ডিসেম্বর, নবিজ উদ্দিন পরিচয়ে আজির উদ্দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। তবে কারাগারে নবিজ উদ্দিনের আঙুলের ছাপ না মেলায় বেরিয়ে আসে আসল সত্য।
আজির উদ্দিনের বক্তব্য
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আজির উদ্দিন জানান, নবিজ উদ্দিনের ভাই নাজমুল হোসেন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে এই প্রতারণার কাজে ব্যবহার করেন। নাজমুলের নির্দেশেই তিনি নবিজ উদ্দিন সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আইনজীবীর ভূমিকা
নবিজের আইনজীবী টি আর খান জানান, আসামি পরিচয়ে দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ভুয়া ছিল। দ্রুততার কারণে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
প্রতারণার নতুন মামলা
চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক এই ঘটনায় বাদী হয়ে নতুন একটি প্রতারণা মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় আজির উদ্দিন এবং নাজমুল হোসেনকে।
প্রতিক্রিয়া ও সতর্কবার্তা
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে সত্যায়িত পরিচয়পত্র ছাড়া কোনো আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।”
পরবর্তী পদক্ষেপ
আদালত আজির উদ্দিনকে কারাগারে প্রেরণ করেন এবং নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িত আইনজীবীর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
বিশ্লেষণ:
এ ঘটনা বিচারব্যবস্থার ভরসার জায়গায় প্রশ্ন তুলেছে। একই সঙ্গে, প্রতারণা প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।