অদম্য সংগ্রামী নারী তাহমিনা আক্তার: এক স্বাবলম্বী নারীর জীবনের গল্প

প্রকাশিত: ৪:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫

জাহিদ খান :

কুড়িগ্রাম, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম বালাটারী গ্রামের ৬০ বছর বয়সী তাহমিনা আক্তার, যিনি এক সময়ের দুঃখ-কষ্ট পেরিয়ে এখন সফল কৃষক হিসেবে পরিচিত, তার সংগ্রামী জীবন হয়ে উঠেছে এক শক্তিশালী উদাহরণ।

 

বারো বছর আগে স্বামী হারানোর পর, তার জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। দুই সন্তান থাকলেও তারা কোনো সহায়তা দিতে রাজি হয়নি। অথচ তাহমিনা হার মানেননি। স্বামীর রেখে যাওয়া দেড় একর জমি নিয়ে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেন, বিশেষত মরিচ, বেগুন ও লাউসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন।

 

তাহমিনা বলেন, “প্রথমদিকে বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে বাঁচব, তবে একদিন সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি নিজে কিছু করব।” শুরুর দিকে নানা বাধার সম্মুখীন হলেও, তাহমিনা থামেননি। তার পরিশ্রম ও দৃঢ় মনোবল তাকে আজ সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

 

তাহমিনার প্রতিবেশীরা জানান, তার সংগ্রামী মনোভাব দেখে তারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং নিজস্ব জমিতে চাষাবাদে মনোযোগী হয়েছেন। এক প্রতিবেশী বলেন, “তাহমিনার মতো একজন নারী যদি এত প্রতিকূলতার মধ্যে সফল হতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না? তিনি আমাদের জন্য বড় উদাহরণ।”

 

তবে তাহমিনা আক্তারের রয়েছে কিছু আক্ষেপও। তিনি বলেন, “সরকারি সহায়তার জন্য বহুবার আবেদন করেছি, কিন্তু কখনো কিছু পাইনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে একটি স্প্রে মেশিনের জন্য আবেদন করেছিলাম, সেটি মঞ্জুর হয়নি।”

 

সরকারি সহায়তা না পেলেও তাহমিনা থেমে থাকেননি। তার জীবনের সংগ্রাম প্রমাণ করে, ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি জয় করা সম্ভব। তাহমিনা আক্তারের এই অদম্য সংগ্রাম দেশের প্রতিটি নারীকে অনুপ্রাণিত করবে এবং প্রমাণ করবে যে, নারীরা তাদের সংগ্রাম, আত্মবিশ্বাস এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে সক্ষম।