ইতিহাসের কালের সাক্ষী ঠাকুরগাঁওয়ে জামালপুর জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ দৈনিক চৌকস দৈনিক চৌকস প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫ ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের জামালপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক জামালপুর জমিদার বাড়ী এক সময় ছিল জমিদারি রাজত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতের পশ্চিম বঙ্গের তৎকালীন তাজপুর পরগনার রওশন আলী বংশধর জামাল উদ্দিন ১৮৬২ সালে এই অঞ্চলের জমিদারিত্ব পেয়ে জমিদার বাড়ির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তবে জমিদার বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই, ১৮৬৭ সালে জমিদার বাড়ির সঙ্গে একটি মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এই মসজিদের নাম রাখা হয় *জামালপুর জমিদার বাড়ী জামে মসজিদ। আজ প্রায় দেড়শ বছর পুরনো এই মসজিদ ও জমিদার বাড়ি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত জামালপুর জমিদার বাড়ী জামে মসজিদ এক সময় এ অঞ্চলের মুসল্লিদের ধর্মীয় আধ্যাত্মিক কেন্দ্র ছিল। মসজিদটির বিস্তীর্ণ পরিসর একসাথে প্রায় ৩০০-৬০০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে সক্ষম। মসজিদের প্রবেশমুখে রয়েছে বিশাল একটি তোরণ, যা দর্শনার্থীদের প্রথম নজর কাড়ে। মসজিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এর তিনটি কারুকার্য মণ্ডিত গম্বুজ এবং আশিটি মিনার, যার উচ্চতা প্রায় ৩৫ ফুট। এই গম্বুজ ও মিনারের অপূর্ব নকশা, ফুলেল ডিজাইন এবং কারুকাজের সমন্বয়ে মসজিদটি এক অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মসজিদটির গম্বুজের শীর্ষদেশে কাচ পাথরের কারুকাজ করা রয়েছে, যা আরও এক ধরনের সৌন্দর্য যোগ করেছে। মসজিদের ছাদে মোট আটাশটি মিনার রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটি মিনার প্রায় ৩৫ ফুট উচ্চতার এবং বিভিন্ন নকশায় খচিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বিরল মসজিদগুলোর মধ্যে একটি। মসজিদটি চারটি মূল অংশে বিভক্ত: ১. মূল কক্ষ ২. ছাদসহ বারান্দা ৩. ছাদবিহীন বারান্দা ৪. মূল দরজা মূল কক্ষের পরিমাপ ২৯ × ৪৭ ফুট, এবং ছাদবিহীন বারান্দার পরিমাপ ২১ × ৪৭ ফুট। মসজিদের দেয়ালগুলোর শোভা, লতাপাতা ও ফুলের নকশা দিয়ে খচিত, যা মসজিদের সৌন্দর্য ও শৈল্পিক মূল্য অনেক গুণ বাড়িয়েছে। এই মসজিদ ও জমিদার বাড়ি প্রতিদিন বহু দর্শনার্থী আকৃষ্ট করে, যারা এই ঐতিহাসিক স্থাপনার ইতিহাস জানার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে আসে। জামালপুর জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ* আজও দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অমূল্য রত্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। SHARES ছবিঘর বিষয়: