ফরিদপুরে সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়: শিশুদের জন্য আলোকিত আশ্রয়

প্রকাশিত: ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২৫

শরিফুল ইসলাম, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় সংলগ্নে অবস্থিত ফরিদপুর সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ।

এটি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে তাদের শিক্ষার পাশাপাশি সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হয়। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি বর্তমানে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান করছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক :

কাজী কাউসার উদ্দিন জানান, “আমাদের লক্ষ্য হলো এই শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনের অংশ করে তোলা। আমরা এখানে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করি, যাতে তারা নিজেরাই স্বাবলম্বী হতে পারে।”

চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি: 

বিদ্যালয়টি এখনও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তার অভাবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সুবিধা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শিক্ষকের অভাবে পাঠদানের যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শিশু শ্রেণী হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হতো, এখন তা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব রয়েছে, বাসস্থানেরও বেশ স্বল্পতা রয়েছে।”

আরও বলেন:

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী কাউসার উদ্দিন* , “বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য গুনগতমানের শিক্ষার পাশাপাশি আলাদা কারিকুলাম প্রয়োজন। যেমন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বেল পদ্ধতি এবং বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষার বই গুলোর অপর্যাপ্ততা রয়েছে। তাদের সু-নির্দিষ্ট কোনো কারিকুলাম নেই। এই সমস্যা গুলোর সমাধানের মাধ্যমে যেনো পরিপূর্ণভাবে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা তাদের শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করতে পারে।”

বিদ্যালয়ের ভূমিকা: 

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও বিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। স্থানীয় বাসিন্দা *রফিকুল ইসলাম* বলেন, “আমার ছেলের কথা বলার ও শোনার ক্ষমতা নেই, কিন্তু এই স্কুলে ভর্তি করার পর সে অনেক কিছু শিখেছে। এখন সে তার হাত দিয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা: 

ফরিদপুর বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় একটি উদাহরণ, যা প্রমাণ করে সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহায়তা পেলে প্রতিবন্ধী শিশুরাও জীবনে এগিয়ে যেতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করতে প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা।

 

প্রতিষ্ঠানের আরও উন্নয়ন, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি যোগাতে সরকারি উদ্যোগ এবং সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।